বাংলাভাষার প্রথম ফ্রিল্যান্সিং সাইট
বাংলাভাষার প্রথম ফ্রিল্যান্সিং সাইট
যারা ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে কাজ করতে চান অথচ ইংরেজি-ভীতি আছে, তাদের জন্য এসেছে বাংলা ভাষার প্রথম ফ্রিল্যান্সিং সাইট ‘KajKey.com’। আর যারা কাজ করিয়ে নিতে চান তারাও সহজেই ঘরে বসে কাজ করতে পারবেন। আপনি যদি এ সুযোগ নিতে চান, বাংলায় ‘KajKey.com’-এ নিবন্ধন করুন। তারপর ক্লায়েন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফি· ডিজাইন, অ্যানিমেশন ভিডিও তৈরিসহ যেকোনো কাজ করা যাবে।
মাতৃভাষায় ফ্রিল্যান্সিং সাইট চালু প্রসঙ্গে ‘কাজ কী’-এর বিজনেস ডেভেলপমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট আহসান আহমেদ মল্লিক এই সময়কে বলেন,
‘‘বিদেশে আছে আপ-ওয়ার্ক, ফাইভার এর মতো সাইট। তেমনি আমরা করেছি ‘KajKey.com’।’’
তিনি আরো বলেন, ‘দেশের বেকার তরুণরা কাজ জানে। কিন্তু ভাষাগত সীমাবদ্ধতার কারণে তারা কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে না। তাদের জন্যই আমাদের ফ্রিল্যান্সিং সাইট। অনেক SME আছে যেখানে বাজেটের অভাবে কাজ আটকে থাকে। তারা আমাদের প্লাটফর্মের মাধ্যমে কাজ করতে পারে স্বল্প খরচে। কারণ কোনো আইটি ফার্ম বা এজেন্সি থেকে করিয়ে নিতে গেলে অনেক বেশি খরচ হবে। অথচ ওই কাজটা একজন ফ্রিল্যান্সার বাসায় বসেই করে দিতে পারে। এভাবে দুই পক্ষই উপকৃত হবে।’
দেশের বেকার তরুণরা কাজ জানে। কিন্তু ভাষাগত সীমাবদ্ধতার কারণে তারা কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে না। তাদের জন্যই আমাদের ফ্রিল্যান্সিং সাইট।
আহসান আহমেদ মল্লিক, সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ভাইস প্রেসিডেন্ট (বিজনেস ডেভেলপমেন্ট), কাজ কী
‘কাজ কী’-এর দুই ধরনের ইউজার আছে। একজন যে কাজ করতে চায়। আরেকজন কাজ করিয়ে নিতে চায়। যেমন একটা কোম্পানির লিফলেট তৈরি করতে হবে। তিনি এই সাইটে ঢুকে কাজের সব তথ্য দিয়ে কাজ পোস্ট করলেন। যেখানে বাজেটও বলা থাকবে। যেসব ফ্রিল্যান্সার এ বিষয়ে দক্ষ তাদের কাছে এর নোটিফিকেশন চলে যাবে। যারা এই বাজেটে আগ্রহী তারা জানাবে। কতজন ফ্রিল্যান্সার কাজটা করতে চায়, সে নোটিফিকেশন ক্লায়েন্টের কাছে পৌঁছে যাবে। তখন ক্লায়েন্ট ফ্রিল্যান্সারদের পোর্টফোলিও দেখবে, তাদের প্রোফাইল দেখবে। তারপর যাকে পছন্দ হবে তার সঙ্গে চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করবে। এই আলাপ ইতিবাচক হলে ফ্রিল্যান্সার কাজ শুরু করতে পারবেন। তার আগেই কিন্তু বাজেটের পুরোটা ‘KajKey.com’-এর কাছে জমা রাখতে হবে। যখন কাজ শেষ হবে তখন কাজের পোস্টদাতা অর্থাৎ ক্লায়েন্টের কাছ থেকে কনফার্মেশন নিয়ে ফ্রিল্যান্সারকে টাকাটা পরিশোধ করা হয়। এক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সার পাবে ৭৫ শতাংশ। বাকিটা পায় ‘কাজ কী’। কাজ যদি ক্লায়েন্টের পছন্দ না হয়, তবে পুরো টাকা তিনি আবার ফেরত পাবেন।
‘KajKey.com’ প্লাটফর্মের মাধ্যমে যেসব কাজ বেশি করা হচ্ছে তার মধ্যে আছে ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফি· ডিজাইন, ডাটা এন্ট্রি, ডিজিটাল মার্কেটিং এবং প্রমোশনাল ভিডিও। প্রমোশনাল ভিডিওতে অ্যানিমেটেড কনটেন্টগুলোর কাজ করা হয়। যেমন কার্টুন, গ্রাফিক্স মাধ্যমে যে ভিডিও কনটেন্ট সেগুলো। টু-ডি, থ্রি-ডি অ্যানিমেশন, ইনফোগ্রাফি অ্যানিমেশন এ রকম ভিডিও। ‘KajKey.com’ প্লাটফর্মের মাধ্যমে কেউ কেউ মাসে ৫০-৬০ হাজার টাকা আয় করছে। বগুড়ার একজন ফ্রিল্যান্সার এখন একটি টিম তৈরি করে কাজ করছেন। টাঙ্গাইলের একজন করেছেন ঢাকার গাউছিয়া মার্কেটের একজন ক্লায়েন্টের কাজ। এভাবেই ‘KajKey.com’ সারা দেশের যোগাযোগ করিয়ে দিচ্ছে সবার সঙ্গে। ফ্রিল্যান্সারদের টাকা দেওয়া হয় বিকাশের মাধ্যমে। তবে টাকা সংগ্রহের ক্ষেত্রে ‘KajKey.com’ বিকাশের পাশাপাশি ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ডও ব্যবহার করে থাকে।
এতদিন আউটসোর্সিং দেশে বসে বিদেশের কাজ করার বিষয়টি বুঝাত। এই ধারণায় পরিবর্তন এনেছে ‘KajKey.com’। ফ্রিল্যান্সাররা এ সাইটের মাধ্যমে দেশের অনেক কাজও করতে পারছে সহজেই। এভাবে দেশের টাকা থাকছে দেশেই। কারণ এতদিন আমাদের দেশের অনেক কাজ বিদেশি ফ্রিল্যান্সাররা করত।
‘KajKey.com’ সাইটে এখন ২০ হাজারের বেশী ফ্রিল্যান্সার কাজ করছে। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে এর কার্যক্রম শুরু হয়। তবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা জানুয়ারি থেকে। ‘KajKey.com’ ফ্রিল্যান্সিং সাইটে নিবন্ধন করতে কোনো ফি দিতে হয় না। এখানে যার যে দক্ষতা আছে সেসব তথ্য ক্যাটাগরিতে ফিলাপ করে সাবমিট করে দিয়েই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। এখানে আগের অভিজ্ঞতার তথ্যও তুলে ধরা যায়। একজন ক্লায়েন্ট ফ্রিল্যান্সারের ওইসব তথ্য দেখেই তাকে কাজ দেয়। ‘KajKey.com’ শুধু অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারদের নিয়েই ভাবছে না, তারা ফ্রিল্যান্সিংয়ে আগ্রহীদের নিয়েও ভাবছে। তাদের জন্য প্রশিক্ষণ ও সেমিনার আয়োজনের ব্যবস্থা করা হবে ভবিষ্যতে। সব মিলিয়ে একটি বড় আকারের ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম হতে চায় ‘KajKey.com’।
No comments